মফস্বলের একটি মেয়ের শহুরে কলেজে অভিজ্ঞতা

একটা কথাই বেজে উঠেছিল সেদিন “পড়তে হবে আমাকে আরো বেশি করে পরিশ্রম করতে হবে”। শিক্ষা টা শুধু পুঁথিগত নয়, শিক্ষাটা হলো অন্তরের আলো জ্বালানোর এক পথ। আমার দাদা সম শিক্ষক যিনি আমায় পড়িয়েছেন তিনি আমাকে শিখিয়েছেন যে নম্বরের ভিত্তিতে কখনো পড়াশোনা করতে নেই, পড়াশোনা করতে হয় মন দিয়ে। শিক্ষার কোন শেষ নেই। আমি উচ্চ মাধ্যমিকে অন্য কোনো শিক্ষক বা শিক্ষিকার কাছে পড়তাম না। আমার একজন শিক্ষকই ছিল সুতরাং বহুবিধ শিক্ষক বা শিক্ষিকার  সমাহার থাকলেই ভালো রেজাল্ট করা যায় তা কখনোই না।পড়ার আগ্রহ এবং পড়ার জেদ দুটো যদি থাকে, তাহলে সব সম্ভব।

আমি উচ্চমাধ্যমিকে 86.2শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেছি ,আমার কাছে এটা অনেক যে মেয়েটা মাধ্যমিকই 53 % নম্বর পেয়েছে তার কাছে 86 এটা অনেক, আমার স্বপ্ন ছিলো মফস্বলের গণ্ডি পেরিয়ে শহরের পথে পা রাখার। বর্তমানে আমি বেথুন কলেজে ভর্তি হয়েছি এই কলেজে আমার অভিজ্ঞতা খুবই কম।আমি যে কলেজে পড়াশোনা করছি সেই কলেজ একটি সরকারি কলেজ অবশ্যই,এবং আমি কলা  বিভাগ নিয়েই পড়াশোনা করেছি এটা বলতে আমার কোন দ্বিধা নেই কারণ সবাই ভাবে যে যারা কলা  বিভাগ নিয়ে পড়ে তাদের হয়তো পড়তে হয় না। যারা বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়ে তাদের মাথায় খুব চাপ থাকে এবং তাদেরই খালি পড়তে হয় এটা আমাকে বহুবার শুনতে হয়েছে। কলেজে যাতায়াতের অভিজ্ঞতা সেরকমভাবে কিছু না হলেও পথেঘাটে সচেতনভাবে যাতায়াত করার আবশ্যকতা প্রতি পদক্ষেপে অনুভব করছি।  একটা মফস্বলে থাকা মেয়ে কলকাতার মতো একটা শহরে পড়তে যাচ্ছে এটা আমার মনে হয় খুব দরকার আমার শিক্ষক তাই বলেন তার জন্যই আজ আমি এখানে,এছাড়াও আমাকে অনেকে অনেকভাবে সাহায্য করেছে আজ এই জায়গায় পৌঁছানোর জন্য তাদের প্রতিও আমি যথেষ্ট কৃতজ্ঞ,আমার জীবনের সমস্ত ওঠা পড়া আমার জীবনের সমস্ত খারাপ সমস্ত ভালো সবটা হয়তো সবাই জানে না ,কিন্তু আমি জানি ওঠাপড়া না থাকলে জীবনে বড় হওয়া যায় না,এই জায়গায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটা কথা খুব মনে পড়ে বেড়ার নিয়ম ভাঙ্গলে পথের নিয়ম আপনি বেরোবে।আমি জানিনা আমি বেড়ার নিয়ম কতটা ভাঙতে পেরেছি কিন্তু নিজের সমস্ত ছেড়ে আমি একটা আশা নিয়ে ই বড় হচ্ছে।যে আমি পড়াশোনা শিখব শুধু নম্বর নয় আমার জীবনের জ্ঞানটাই মূল উদ্দেশ্য মূল লক্ষ্য হবে আমি এটা অবশ্যই আশা করব। আমার আশেপাশের মানুষজন খুবই ভালো আমাকে ভীষণ উৎসাহিত করে, আমার ছোট ছোট আনন্দ খুশি ইত্যাদি দায়িত্ব রাখে আমি তাদের প্রতি খুবই আপ্লুত , আমিও চাই সবাইকে নিয়ে চলতে। কলেজে আমার কিছু নতুন বন্ধু হয়েছে ফলে আমি অনুভব করতে পারছি মফস্বলের সাথে শহুরে চালচলন আদবকায়দা পোশাক আশাক কত পার্থক্য। মতপার্থক্য কিছু ক্ষেত্রে চোখে পড়ছে। কলেজে পড়াশোনার ধরনটাও অনেকটাই আলাদা। কলেজে যেভাবে পড়ানো হয় সেটা মনযোগ দিয়ে শুনলে আর পরবর্তীকালে পড়তে হয় না। আমার দেড়-মাসের কলেজ জীবনে এইটুকুই আমার অভিজ্ঞতা।

Picture Courtesy – The 400 Blows (1959), Directed by Francois Truffaut 
 

Name- Priti Patra
Age- 17
Class- BA SEM 1
Institution– Bethune College

 
Open chat
1
How Can I Help You
How Can I Help You