প্রবন্ধ

আমি ছোট বেলা থেকে খুব একটা পশু পাখি ভালোবাসি না। বরং বেড়াল, কুকুর, পাখি, খরগোশ দেখলে তাড়া করি, ভয় পাওয়াই, বিরক্ত করি, কখনো কখনো আবার দুষ্টুমি করে এগিয়ে জল দিয়ে দিতাম। আমার বাড়িতে একটা বিড়াল রোজ দিন খাওয়ার সময় আসত , খেয়ে নিয়ে আবার চলে যেত। আমার খুৱ রাগ উঠতো ইটা ভেবে যে ওর সাথে কি আমার বরিস শুধু খাওয়া দেওয়ার সম্পর্ক ? এক দুই বার আদর করবো ভেবেছিলাম কিন্তু ও খুব একটা পছন্দ করেন যে কেউ ওর গায়ে হাত দিক। তখন আরো রাগ উঠতো। তাই একদিন রেগে দিয়ে ওর লেজের লোম কচি দিয়ে ছেঁটে দিয়েছিলাম যখন ও ঘুমাচ্ছিলো পাঁচিল এর উপরে। ওর অদ্ভুত লোম কাটা লেজ দেখে , আর ওর করুন মুখ্য দেখে আমার খুব হাসি পাচ্ছিলো যদিও আমার মা বকা দিয়েছিলো। আমাদের বাড়িতে আরো দুটো কুকুর আছে, ওরা দুই বোন। এক জনের নাম Kivo আর একজন এর নাম Pako. দুই জনেই হলো চরম ভীতু। মাথায় হাত বোলাতে ডাকলেও লেজ গুটিয়ে পালায়ে।বাড়িতে ডাকাত পড়লেও বোধ হয় এদের কাজ হবে উঠোনের শিউলি গাছের গোড়ায় গিয়ে লেজ গুটিয়ে শুয়ে থাকা। কুকুর দুটো এতটাই ভীতু যে আদর করতে কেউ কাছে গেলেও ডিউরে পালিয়ে যায়। আমি ইটা ভেবেও হাসতাম। কিন্তু তার পর একদিন আমাকে মা বললো যে ওরা আগে অনেক চঞ্চল ছিল, অনেক আনন্দ করতো, সবাইকে বিশ্বাস করতো, সারাক্ষন লাফালাফি করতো, দৌড়ে বেড়াতো আর অনেক ডাকা ডাকি করতো। ওরা রাতের বেলা অনেক ডাকতো বলে সবাই খুব বিরক্ত হতো এমনকি ওদের খুব লাঠি পেটাও করেছিল কেউ কেউ। একবার কালী পুজোয় ওদের দিকে চকোলেট বোম্ব, কালিফটকা ছুড়ে দেওয়া হয়। বাজি দিয়ে ওদের ভয় দেখানো হয়। শুধু তাই নয় কিভো এর লেজে ফুলঝুরি বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। দোলের সময় ওদের গায়ে বাজে রং ঢেলে দেওয়া হয়েছিল। আমি প্রথমে অতটা অনুভব না করলেও যখন ওদের দিকে বার বার দেখি, আর দেখি ওরা কিভাবে চুপ চাপ শান্ত হয়ে শিউলি গাছটা কে নিজের বাড়ি করে নিয়েছে তখন খুব কষ্ট হতে লাগলো। সামনে পুজো , তার পর কালী পুজো আসবে। প্রত্যেক বছর তাই আমি খুব সতর্ক থেকেই যাতে ওদের গায়ে কেউ বাজি না দিয়ে যায়। বাজির আওয়াজে ওরা একদম গুটিয়ে পরে। খুব ভয় পায়। আমি তাই এখন ওই বিড়াল টা যার লেজ এর লোম কেটে দিয়েছিলাম তাকেও বিরক্ত করিনা। পুজোর সময় ও দ্বীপাবলি তে আমি ওদের খুব যত্নে রাখি। আর সব সময় খেয়াল রাখি যাতে ওদের উপর কোনো অত্যাচার না হয়। এখন ওরাও আমাকে খুব বিশ্বাস করে। এখন ও আর আমাকে দেখে পালিয়ে যায়না। ওদের সাথে খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।
Name- Iman Bhattacharya
Class- VII
Age – 13
School – The Summit School
সভ্যতার সঙ্গে বিজ্ঞানের সম্পর্ক অতি ঘনিষ্ঠ। আধুনিক সভ্যতার চরম উন্নতি হয়েছে বিজ্ঞানের সাহায্যে। বিজ্ঞানের সাহায্যে মানুষ এখন কত কিছুই আবিষ্কার করেছে। মানুষ আজ গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে ছুটে চলেছে। দুরারোগ্য ব্যাধির হাত থেকে আত্মরক্ষা করতে পারছে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরের মানুষকে দেখতে পাচ্ছে ও কথাও বলতে পারছে। বাড়িতে বসেই দেশ-বিদেশের খবরা-খবর পাচ্ছেন এবং সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে। এখন মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান এক অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠে। মানব সভ্যতার নানা ধাপ অতিক্রম করে মানুষ আজ উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে গেলেও দুর্গম দুর্নিবার প্রকৃতিকে বিজ্ঞান সম্পূর্ণরূপে আয়ত্তে আনতে পারেনি। আজও প্রকৃতির বিরূপতায় মানুষ সমাজকে বারবার প্রধানত হতে হয়। প্রকৃতি তার খেয়াল খুশি মতোই চলে। কখনো খরা রূপে কখনো ঝড় বজ্রপাত রূপে আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায়। তাই আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও আজ যতই সম্পূর্ণ বিজ্ঞান নির্ভর হোক না কেন, তবুও প্রকৃতির রুদ্ররূপ এর কাছে তাকে বারবার হার মানতে হয়। সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া কিছু প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখে আমার মনে হয় বিজ্ঞান যতই আমাদেরকে গ্রহ থেকে গ্রহন্তয়ে পৌঁছে দিক না কেন, মানব সভ্যতা আজও প্রকৃতির কাছে অসহায়। আজও হাজার হাজার মানুষকে বন্যার কবলে পড়ে প্রাণ হারাতে হয়েছে, অনাবৃষ্টির কারণে বা বজ্রপাতে প্রচুর মানুষ এখনো প্রাণ হারায় বা কম করে অনাহারে জীবন কাটায়।বিজ্ঞান মানুষকে অনেক আরামদায়ক জীবন দিয়েছে; এই কথা যেমন সত্যি, তেমনি একথাও সত্যি যে সেই বিজ্ঞানের জয়যাত্রায় প্রকৃতি তিলে তিলে ধ্বংস হয়ে চলেছ। উন্নয়নের নামে বিশ্বব্যাপী লক্ষ্য লক্ষ্য বৃক্ষ ধ্বংস হয়ে চলেছে নিত্যদিন বা পাহাড় কেটে বহু দেশে জলবায়ু ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য ধ্বংস হচ্ছে। বিজ্ঞানের অপব্যবহার পৃথিবীকে কলুষিত করে তুলেছে। আমার মতেই মানবজাতি যতদিন না বিজ্ঞানকে নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থ কামনার্থে ব্যবহার করা দমিয়ে বৃহৎের দিকে চালনা করবে ততদিন মানবজাতিকে প্রকৃতিক বিরূপতা স্বীকার হতে হবে।
Name – Hrishab Ghosh
Age – 15
Class – IX
Institution – Dolna Day School